নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর দুর্গাপুরে যৌতুক না পেয়ে আফরিন আক্তার বৃষ্টি (২২) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ২ জন কে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ১৪ মার্চ বিকেলে উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আনোলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আমিন বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
রোববার দুপুরে উপজেলার আনোলিয়া এলাকায় র্যাব-৫ ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামী বৃষ্টির শশুর আব্দল জলিল (৫৫) ও ননদ শ্যামলীকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ৫ বছর আগে আফরিন আক্তার বৃষ্টির (২২) সাথে শাহিনুর রহমানের (৩০) বিবাহ হয়। তাদের সংসারে ১টি কন্যা সন্তান আছে। বিবাহের পর থেকেই বৃষ্টির শশুর বাড়ীর পক্ষ থেকে যৌতুক দাবী করে। বৃষ্টির পরিবার তার সংসারে সুখের কথা বিবেচনা করে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক প্রদান করে। এর পরেও বৃষ্টির স্বামী তার বাবা ও মায়ের প্ররোচনায় বৃষ্টিকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময়ে মারপিট এবং শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। শাহিনুর বিদেশ যাওয়ার জন্য ৩ লক্ষ টাকা দাবী করলে বৃষ্টির পরিবার পুনরায় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু এর পরেও বৃষ্টির স্বামী ও তার পিতা-মাতা শারীরিক ও মানসিকভারে নির্যাতন করতে থাকে এবং আরো টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
গত শুক্রবার ১৪ মার্চ বিকেলে বৃষ্টির স্বামী শাহিনুর ও তার শশ্বুর, শাশুড়ী ও ননদ মিলে মারপিট করেছে বলে মোবাইল ফোনে বৃষ্টি তার পরিবারের কাছে জানায়। এতে তার শশুরবাড়ীর লোকজন আরো বেশী ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিনুর বৃষ্টির তলপেটে লাথি মারে ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে ঘরের ভিতর মরদেহ ফেলে দরজা-জানালা বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
নিহতের ভাই জহুরুল ইসলাম জানান, যৌতুকের দাবিসহ নানান বিষয় নিয়ে তার বোনকে প্রায় মারধর করতো শাহিনুর। শুক্রবার সন্ধ্যায় হত্যার উদ্দেশ্যে আবারও তাকে মারধর করে এবং সেই আঘাতে মারা যান। আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা বলেন,গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় তার শ্বশুর জলিল ও ননদ শ্যামলীকে রবিবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।